ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় উৎপাদনের হার ১০০%: শিল্পমন্ত্রী

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, নবনির্মিত ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানায় (জিপিইউএফপি) বর্তমানে ইউরিয়া সার উৎপাদনের হার ১০০ শতাংশ। অর্থাৎ পুরো ক্ষমতা বা সামর্থ্য অনুযায়ী সার উৎপাদন চলছে। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের মিতসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ (এমএইচআই) ও চীনের সিসি সেভেনের যৌথ প্রচেষ্টায় ইউরিয়া সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে।

মন্ত্রী আজ শনিবার জিপিইউএফপি পরিদর্শন শেষে কারখানার ভিআইপি গেস্টহাউসে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন। এ সময় নরসিংদী-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান দীলিপ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য মাসুদা সিদ্দিক রোজী, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, অতিরিক্ত শিল্পসচিব মো. শামীমুল হক, বিসিআইসির চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান, ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের (জিপিইউএফপি) পরিচালক মো. সাইদুর রহমান, এমএইচআইয়ের প্রকল্প পরিচালক হিরোতেসি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইউইচি চাইমা উপস্থিত ছিলেন। শিল্প মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘আমার নিজের নির্বাচনী এলাকা নরসিংদী অঞ্চলের মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এ সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এটি পুরোপুরি চালু হওয়ার ফলে দেশের সার আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়েছে ও সার সংকট দূর হয়েছে। এতে নতুন করে ৩০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সর্বোপরি সার কারখানাটি দেশের কৃষি উৎপাদন, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক অবদান রাখছে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে সার উৎপাদন আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ভোলা ও আশুগঞ্জে নতুন দুটি সার কারখানা স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে একটি ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সৌদি আরবের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বর্তমান সরকার সার উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের সার কারখানাকে সঠিক ও সর্বোচ্চ উৎপাদনক্ষমতায় পরিচালনা করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আমাদের আর কোনো দিন সার আমদানি করতে হবে না। প্রয়োজনে আমরা দেশের বাইরে সার পাঠাতে, অর্থাৎ রপ্তানি করতে পারব।’

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জিপিইউএফপির বাল্ক স্টোরেজ ও প্যাকেজিং ইউনিট পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে তিনি পরিবেশবান্ধব, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক এ ইউরিয়া সার কারখানায় নিয়মিত উৎপাদন ও মনিটরিং নিশ্চিতকরণে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর নরসিংদীর পলাশে স্থাপিত এই সার কারখানার উদ্বোধন করেন। শিল্প মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জিপিইউএফপি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ ধরনের বৃহত্তম কারখানা। ১১০ একর জমিতে ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানাটির দৈনিক সার উৎপাদন ক্ষমতা ২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। আর কারখানাটির বার্ষিক সার উৎপাদনক্ষমতা ৯ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন।

Related posts

Leave a Comment